রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

লাইফস্টাইল | তিন নারীর স্বপ্নের উড়ান, নারী দিবসে রইল তাঁদের ‘পারি’র গল্প

Parama Dasgupta | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০৮ মার্চ ২০২৫ ১৩ : ৪৩Soma Majumder


আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওঁরা জানতেন, ঠিক পারবেন। তাই দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছেন।
ওঁরা জানতেন, সামলে নেবেন। তাই কে কী বলল, কিছু আসে যায়নি। 
ওঁরা জানতেন, এগিয়ে যাবেন। তাই হাজার বাধা উড়িয়েছেন এক তুড়িতে।
আর দেখিয়ে ছেড়েছেন, বুঝিয়ে দিয়েছেন, শুধু স্বপ্ন দেখাই নয়, তাকে সত্যি করে তোলার সাহস তাঁদের বুকের মধ্যে ঠাসা। আরও একটা নারীদিবসে দাঁড়িয়ে তাই এমনই তিন আগুনপাখিকে কুর্নিশ জানাচ্ছে আজকাল ঘরোয়া। যাঁদের প্রত্যেকের পিঠে একজোড়া অদৃশ্য ডানা। যে ডানায় ভর করে স্বপ্নগুলো রোজ আকাশ ছুঁতে চায়।    

ইদানীং অনেকেই বলেন, ‘আমি নারী আমি সব পারি’, এ কথাটা বড্ড ক্লিশে। কারণ সবটা পারার, সবটা করার দায় নারীর নেই, কিংবা সবটা পারলেও প্রমাণ করার দায় নেই। কিন্তু সেই একই পাতার উল্টোপিঠে আজও কিন্তু একটা অন্য গল্প লেখা। কারণ, যুগ কিংবা জীবনধারা যতই এগোক তরতরিয়ে, আজও কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই বহু মেয়ের চারপাশে একটা অদৃশ্য গণ্ডি কাটা থাকে। কোথাও নিষেধের বেড়াজাল, কোথাও থাকে ‘ও মেয়ে, ও পারবেনা’-বদ্ধমূল ধারণা। তাই নিজের জন্যই, নিজের কাছেই প্রমাণ করার দায় থাকে, ‘আমি পারি’। যে স্বপ্নগুলোয় কেউ বিশ্বাস রাখতে চাইছেনা কিংবা স্রেফ দমিয়ে দিতে চাইছে, তাকে সত্যি করার তাগিদে নাছোড় জেদ শেখায়, পারতেই হবে। তখন কি আর ভাবনাটা ক্লিশে থাকে?

ও তো মেয়ে, ও কী ক্যামেরা করবে?
ইদানীং টলিউড এক ডাকে চেনে তাঁকে। সিনেম্যাটোগ্রাফার মধুরা পালিত। বাবা-মা দু’জনেই আর্ট ফোটোগ্রাফার, ছোট থেকেই তাই ক্যামেরায় হাতেখড়ি এবং ক্রমে নেশা থেকে তাকে পেশা করতে চাওয়ার স্বপ্ন। মধুরা একদিন বেছে নিলেন তাঁর পথ। সিনেম্যাটোগ্রাফি। সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে এসআরএফটিআই হয়ে তাঁর স্বপ্নগুলো ডানা মেলতে শুরু করছিল আস্তে আস্তে। কোর্স প্রোজেক্ট থেকে বন্ধুবান্ধবের তৈরি শর্ট ফিল্ম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম- নিজের শেখাগুলোকে ঘষেমেজে পোক্ত হচ্ছিলেন মধুরা। কিন্তু বাধ সাধল কমার্শিয়াল ছবির ইন্ডাস্ট্রি। কিছুতেই কেউ কাজ দিতে রাজি নয়! মধুরার কথায়, “কেউ ভাবতেন, মেয়ে আবার সিনেম্যাটোগ্রাফি করবে কি! কেউ বলতেন, ও ক্যামেরা পারবেনা। কেউ বা স্রেফ মেয়ে বলেই আস্থা রাখতে পারতেন না। আমি জানতাম, একবার সেটে পৌঁছতে পারলে আমার কাজই আমার হয়ে কথা বলবে। কিন্তু সেট অবধি পৌঁছতেই পারছিলাম না কিছুতেই। শেষমেশ পরিচিত দু’এক জন নামী সিনেম্যাটোগ্রাফার তাঁদের কাছে আসা বাড়তি কাজে আমায় রেফার করলেন। কিছু প্রোমো, বিজ্ঞাপন ছবি আস্তে আস্তে নজর কাড়ল।” শেষমেশ, ‘কিশমিশ’। দেবের ছবিটা মধুরার জীবনে এল মাইলস্টোন হয়ে। মনপ্রাণ ঢেলে কাজও করলেন তাতে। টলিউডকে মধুরার জাত চেনাল এ ছবিই। যার পরে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। কমার্শিয়াল ছবির পাশাপাশি মধুরার ক্যামেরায় একাধিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবির ঝুলিতেও এসেছে পুরস্কার। 

ওসব পড়াটড়া হবে না বাপু, চোদ্দো পেরোলেই বিয়ে! 
লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে নারাজ ছিলেন শতরূপা মজুমদার। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে, বিয়েও হয়েছিল আর এক রক্ষণশীল যৌথ পরিবারে। যে বাড়িতে পরিবারের মেয়ে-বৌদের সন্ধে সাতটার পরে বাইরে থাকা মানা। এমন বাড়ির বৌমা নাকি পৌঁছে গেলেন সেই সুন্দরবন! ২০১২ সালে তাঁরই এনজিও ‘কাটাখালি স্বপ্নপূরণ ওয়েলফেয়ার সোসাই’টির হাত ধরে হিঙ্গলগঞ্জে তৈরি হল সেখানকার একমাত্র ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন স্কুলের আর্কিটেক্ট বিশ্বজিৎ সাহাও। এখন সেই স্কুলের পাশাপাশি সুন্দরবনের প্রান্তিক গ্রামগুলোয় তৈরি হয়েছে আরও চারটি শিক্ষাকেন্দ্র। পাশে দাঁড়িয়েছেন একঝাঁক তরুণ সহকর্মী। প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পড়া, কো কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি এবং খেলাধুলোর সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের মায়েদেরও কাজের সুযোগ করে দিচ্ছেন সকলে মিলে। তা বলে ঘরে-বাইরে শতরূপার লড়াইটা সহজ ছিল না মোটেই। একটু একটু করে বাড়ির লোকের আস্থা অর্জন করতে পারলেও সুন্দরবনের গ্রামের মানুষেরা বাধ সেধেছিলেন অনেকটাই। শতরূপার কথায়, “ওখানকার ছোট মেয়েদের স্কুলে নিয়ে আসাটাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ বাড়ির পুরুষেরা, বাবা-দাদা-ঠাকুর্দাদের বেশির ভাগই মেয়েদের পড়তে দিতে নারাজ। কারণ বিয়েটাই যে তাদের একমাত্র ভবিষ্যৎ! এমনকী স্কুলে ভর্তি করেও ছাড়িয়ে নিয়েছেন অনেকেই। কেউ বা স্পোর্টস কিংবা ফাংশনে বাড়ির মেয়ের যোগ দেওয়ার প্রস্তাবে স্কুলে যাওয়াই বন্ধ করে দিতে চেয়েছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়েছি। ওঁদের বোঝাতে সময় লেগেছে। এখন অবশ্য ছবিটা পাল্টেছে অনেকটাই।” শতরূপার সামনে এখন বড় হওয়ার চ্যালেঞ্জ। আজও এনজিও-র ফান্ড জোগাড় করাটা যে রীতিমতো কঠিন! কলকাতা বা বাংলা পেরিয়ে এখন তারই কাজে দিল্লি-মুম্বই ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। ভালবেসেই। 

পুঁতিটুতি গাঁথা কোনও কাজ হল নাকি!
স্বামী-দুই মেয়েকে নিয়ে গৃহবধূর জীবন কাটছিল অনুরূপা সেনগুপ্তের। একদিন ছোট মেয়ের ড্রয়িং স্কুলের টিচারকে নিজে হাতে নানা রকম গয়না বানাতে দেখে শখ হয়েছিল তাঁরও। তারপর ওই শিক্ষিকার কাছেই হ্যান্ডমেড জুয়েলারির প্রথম পাঠ। ২০১৭-য় প্রথম প্রথম নিজের হাতে পুঁতি, সুতোর বল, মেটাল পিস, রংবেরঙের পাথর, কাচের মতো নানা উপকরণে বানানো গয়না বিক্রি করতেন আত্মীয়-বন্ধুদের। তারপরে একদিন মুম্বই প্রবাসী দিদির সূত্রে এলেন প্রথম ভিনরাজ্যের ক্রেতা। অনুরূপার তৈরি জাঙ্ক জুয়েলারি তাঁর ভাল লেগে যাওয়ায় তিনি নিজের গয়নার ব্যবসায় জায়গা দিলেন তাকে। ক্রমে এক দিন কলকাতারই এক ফেসবুক গ্রুপে নাম লিখিয়ে ছোট-বড় এগজিবিশনে যোগ দেওয়া শুরু। এরপরে কোভিড-লকডাউনে ফেসবুক লাইভের হাত ধরে আরও পরিচিতি ছড়াল অনুরূপার গয়নার। আর এখন? “একটা সময় ছিল, যখন বাড়ি এবং কাছের মানুষদের সাপোর্ট পেলেও অনেকেই নাক সিঁটকে বলতেন, ওইসব পুঁতিটুতি গাঁথা কোনও কাজ হল! তাতে দমে যাইনি। নিজের মতো করেই শেখাটা চালিয়ে গিয়েছি ইন্টারনেট দেখে, অন্যদের পরামর্শ নিয়ে বা কিছু ডিজাইনকে নিজের মতো বদলে নিয়ে। কখনও ডোকরার গ্রামে, কখনও দার্জিলিংয়ের ১০০ বছরের পুরনো দোকান থেকে জোগাড় করেছি গয়না তৈরির টুকিটাকি। এখন দেশের অনেক জায়গা থেকেই অর্ডার পাই, ব্যুটিক বা দোকান থেকেও অর্ডার আসে। শখেই শুরু করেছিলাম। এখন কিন্তু এটা পুরোপুরি আমার পেশা। নিজের শখের জিনিস কেনা, কাউকে উপহার দেওয়া কিংবা পরিবারের কোনও প্রয়োজন মেটানো এখন নিজের টাকাতেই করি। তার স্বাদই আলাদা!” বলছেন অনুরূপা।
সামনেটায় এখন শুধু ডানা মেলে ওড়ার গল্প। তিন জনেরই।


International Womens Day 2025International Womens DaySuccessful Women

নানান খবর

নানান খবর

শুধু জল খেলেই হবে না, দেখে জলের ঘাটতি রুখতে নিয়মিত খান এই পাঁচটি খাবার!

মহাকাশে প্রথম যৌন সঙ্গম কে করবেন? একে অপরকে টক্কর দেওয়ার নেশায় রকেটে চাপতে উদ্যত দুই মডেল

‘সঙ্গম কক্ষ’ চালু হল কারাগারে! এবার জেলের মধ্যেই শারীরিক মিলনের সুযোগ পাবেন বন্দিরা

পার্লারে যাওয়ার সময় নেই? বাড়িতেই কফি আর টমেটো দিয়ে বানিয়ে ফেলুন ফেসপ্যাক! জেল্লা ফিরবে একদিনেই

বিরল ত্রিপুষ্কর যোগে টাকার ‘ট্রিপল’ ধামাকা! রবিবারের মধ্যেই কপাল খুলবে কোন কোন রাশির?

ছোট থেকেই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হবে সন্তান, কীভাবে বাড়াবেন সন্তানের আত্মবিশ্বাস?

এই রবিতে আর মুরগি নয়, রাঁধুন গোলমরিচ দিয়ে দক্ষিণী ডিম ফ্রাই, ভুলে যাবেন মাছ-মাংসের স্বাদ

সঙ্গীর মধ্যে এখনও মানসিক পরিপক্বতা আসেনি, কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন?

বয়স ১০৩! মন তবুও সবুজ, অর্ধনগ্ন যুবকের হাতে শ্যাম্পেন খেয়ে জন্মদিন উদযাপন করলেন বৃদ্ধা!

বিরল চতুর্গ্রহী যোগের উপর মহাদেবের আশীর্বাদ! পাঁচ রাশির ভাগ্যে আজ টাকাই টাকা! ধনবৃষ্টি হবে কাদের উপর?

বাজার খরচে লাগাম টানতে পারছেন না? এই সব সহজ টোটকাতেই মিলবে সমাধান

সকাল না বিকেল, কখন ব্যায়াম করলে ভাল ঘুম হয়? সঠিক সময়ে ঘাম ঝরালেই মিলবে অনিদ্রা থেকে রেহাই

টোপর মাথায় হাজির বর! সাদা চিকনকারি পাঞ্জাবী-ধুতিতে খাঁটি বাঙালি সাজে দিলীপ

‌সাজে অক্ষয় বাঙালিয়ানা, আজকাল ফ্যাশন ফ্লোর জমজমাট

সপ্তাহে তিন দিন ছুটি! সরকারি কর্মীরা চারদিন অফিসে গেলেই পাবেন পুরো বেতন! কোথায় চালু হল এমন নিয়ম?

সোশ্যাল মিডিয়া